MRITERA KOTHAO NEI ৷ মৃতরা কথাও নেই
₹ 240 / Piece
₹ 300
20%
Author
Specifications
Binding | Hardcover |
Brand | Deep Prakashan |
Genre | Thriller |
Category | Novel |
রহস্য গল্পের মূল হল যে কোনো অপরাধ আর কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজে চলা। টাপুরদিকে নিয়ে যখন প্রথম চলা শুরু করেছিলাম, এর বাইরে খুব বেশি আমিও ভাবিনি।
পাঠক হিসেবে আমি সামাজিক ও রাজনৈতিক সাহিত্য পড়তে বেশি ভালোবাসি। লিখতেও ভালোবাসি। কিন্তু রহস্য কাহিনির একমুখি গতিতে আমার সেই ভালোবাসার জায়গাটা কোথাও যেন হারিয়ে যাচ্ছিল। সেই সময়ে বিশিষ্ট অগ্রজ সাহিত্যিক জয়ন্ত দে কথা প্রসঙ্গে বললেন, 'রহস্য কাহিনি হলে সেটা সামাজিক বা রাজনৈতিক সাহিত্য হতে পারবে না কেন?'
ধন্যবাদ জয়ন্তদা, নতুন করে ভাবতে শেখানোর জন্য। যারা টাপুরদির গোয়েন্দাগিরি ও কৃষ্ণগহ্বর দুটি বইই পড়েছেন, হয়তো সূক্ষ্ম তফাতটা তাঁদের নজরে এসেছে। 'কৃষ্ণগহ্বর'-এ আমি অনেক বেশি করে আমার ভালোবাসাকে প্রশ্রয় দিয়েছি। রহস্য কাহিনির মোড়কে রাজনীতির অন্দরমহলকে ধরতে চেয়েছি সেখানে।
'মৃতেরা কোথাও নেই' লেখার সময় ভেবেই নিয়েছিলাম, এটা পুরোদস্তুর সামাজিক থ্রিলার হিসেবে লিখব। সেইমতো পড়তে শুরু করেছিলাম। এই উপন্যাস পড়তে গিয়ে হয়তো পাঠক আগে খবরের কাগজের পাতায় পড়া, জানা অনেক ঘটনার ছায়া খুঁজে পাবেন। মনে হতেই পারে, সত্যি তো। এমন তো হয়ই। তারপরেই মনে হতে পারে, সত্যি? এমনও হয়? কেঁপে উঠতে পারেন। রাতে ঘুম নাও আসতে পারে।
এসব বলছি, কারণ এই উপন্যাস লেখার সময় আমি অনেক রাত ঘুমোতে পারিনি ঠিক মতো। মাকড়শার জালের মতো এই কাহিনি পাকে পাকে জড়িয়েছে, এক ভয়ঙ্কর, নৃশংস জালের অক্ষরচিত্র আঁকার চেষ্টা করেছি। জানি না কতটা সফল হয়েছি। তবে পুরো কাজটা করেছি নিজের সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে।
মৃতেরা কোথাও নেই তাই সব দিক থেকেই একটু আলাদা। এই উপন্যাসে পাঠক দেখা পাবেন কিছু পরিচিত চরিত্রের। যেমন, ডিসিডিডি সৌরভ সান্যাল, মুখ্যমন্ত্রী অম্লান চক্রবর্তী, সাইবার ক্রাইম ডিপার্টমেন্টের তরুণ অফিসার শুভম ও নিভৃতচারী বৃদ্ধ রাজনীতিক মৃণাল দত্তের। আবার এসেছে অনেক নতুন চরিত্র। এ উপন্যাসে বলার ছিল অনেক কিছু, কিন্তু তথ্যভারে ভারাক্রান্ত করে কাহিনির স্বাভাবিক গতি ব্যহত করতে চাইনি। অথচ মনে হয়েছে তথ্যগুলি সকলের জানা উচিত। সেই কারণে উপন্যাসের শেষে বাস্তব পরিস্থিতিটা সংক্ষেপে তথ্য হিসেবেই পাঠকের কাছে মেলে ধরেছি।
**সোমজা দাস **
“কে বলল লক চেক করিনি? আমাকে দোষ দিবি না, কেটে ফেলব শালা!” লোকটার কণ্ঠস্বরে বিরক্তি ঝরে পড়ছে।
“তা হলে মালদুটো পালাল কী করে?”
“সেটাই তো বুঝতে পারছি না। কড়া ডোজের ঘুমের ওষুধ দেওয়া ছিল। বাকিগুলো তো অঘোরে ঘুমোচ্ছে। ওই দুটো জাগল কেমন করে, কেমন করেই বা পালাল, কিছুই মাথায় ঢুকছে না। বুড়োটা তো প্রায় মরো-মরো ছিল, শালা ট্রাকে তোলার সময় মনে হচ্ছিল রাস্তাতেই টেঁসে যাবে। ধুঁকছিল দেখেছি...”, চিন্তিত শোনাল লোকটার গলা।
“তাহলে এখন?”
খিঁচিয়ে উঠল লোকটা এবার, “এখন আবার কী? খুঁজতে হবে। পায়ে হেঁটে কত দূর যাবে? মাটির তলা থেকে হলেও খুঁজে বের করতে হবে। কাটা মাল ছুটে গেলে বস শালা খাল খিঁচে নেবে।”
অন্য লোকটা একটি অশ্লীল শব্দ উচ্চারণ করে বলল, “এই জন্য চালানের ডিউটি নিতে চাই না আমি। কাটা মাল বাঁচিয়ে রাখার দরকার কী? যত ঢং! শালা উপরওয়ালারা কাটা মাল বারবার কাটবে। মরাধরা ঘেঁটে আমাদের জীবন যায়। কোনদিন পুলিশের হাতে পড়লে উপরওয়ালারা স্রেফ কেটে যাবে, মরব আমরা।”
“হুহ্, ওসব আমরা বুঝব না। কাটা মালও বিক্কিরি হয়। এখন মুখ বন্ধ করে খোঁজা শুরু কর। গোনা মাল ডেলিভারি দিতে না পারলে বস খালাস করে দেবে!” বলতে বলতে হাতে ছয় ব্যাটারির জোরালো টর্চ হাতে এগোল লোকটা।
“আশেপাশের ঝোপজঙ্গলগুলো দেখ ভালো করে। কাঁচা কাটা, কত দূরে যাবে পালিয়ে?”
লোকদুটো এবার আঁতিপাতি করে খুঁজতে শুরু করে। দু-জনের হাতেই দুটো জোরালো আলোর টর্চ জ্বলছে। ওয়াগনের ভেতরে এখনও তেরটা ‘কাটা মাল’ অঘোরে ঘুমোচ্ছে। এদের মধ্যে দু-তিনজনের অবস্থা বেশ সঙ্গিন। ডেলিভারির আগে রাস্তাতেই মরে গেলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। আসলে এদের খোলসটাই আছে, ভেতরটা ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। মাল ঠিক জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব লোকদুটোর। এই ব্যবসায় ভুলের কোনও ক্ষমা নেই। এখানে ভুলের অর্থ হল মৃত্যু, তা ভালো করেই জানে দু-জন। ভয়ে বুকের ভেতরে ঢিপঢিপ করে তাদের। বের করতেই হবে, যেমন করে হোক খুঁজে বের করতেই হবে। নাহলে…
বেশিক্ষণ সময় লাগল না। লোক দু-জন এই লাইনে অনেকদিন আছে। অভিজ্ঞতা সব সময়েই কাজে দেয়। লোকটা ঠিকই বলেছিল, ‘কাটা মাল’ বেশি দূরে যেতে পারবে না। হাইওয়ের পাশ দিয়ে ঢালু হয়ে যেখানটা ঘন ঝোপঝাড়ের মধ্য দিয়ে অন্ধকারে মিশেছে, সেখানেই ছেলেটাকে পাওয়া গেল। গুটিসুটি মেরে বসে ঝোপের আড়ালে নিজেকে লুকোনোর ব্যর্থ চেষ্টা করছিল। ছেলেটার বয়স চোদ্দ-পনেরো হবে। মুখখানা ভয়ে শুকিয়ে গেছে। টেনে তুলতে গিয়ে বোঝা গেল ব্যাপারটা। ওয়াগন থেকে লাফিয়ে নামতে গিয়ে পা-টা মচকেছে ছেলেটার।
“আরেকটা কোথায়? বল শালা!” ছেলেটার চুলের মুঠি ধরে সজোরে ঝাঁকাল ওয়াগনের ড্রাইভারটা।
ভয়ে, ব্যথায় চিৎকার একবার করে উঠল ছেলেটা। ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল তারপর।
“তুই ট্রাকে তোল এটাকে, আমি দেখছি অন্যটাকে…”, বলে অন্ধকারের মধ্যে ছুটে গেল অন্য লোকটা।
*************
**সোমজা দাস**
নব দিগন্ত হোম থেকে হারিয়ে গেল লালন নামে একটি অনাথ কিশোর। টাপুরদির অধ্যাপক বন্ধু উত্তীয় সোম একজন সমাজসেবী। পথশিশুদের নিয়ে কাজ করেন তিনি। উত্তীয় চান, টাপুরদি লালনকে খুঁজে বের করুক।
অপরদিকে জোকা এক্সপ্রেসওয়েতে পাওয়া গেল এক অজ্ঞাতপরিচয় প্রৌঢ়ের মৃতদেহ। ময়নাতদন্তের পর জানা গেল তার শরীর থেকে দুটি কিডনিই কে বা কারা অপারেট করে বের করে নিয়েছে। কলকাতা পুলিশের ধারণা, এক বা একাধিক অর্গ্যান ট্র্যাফিকিং চক্র কলকাতা ও তার আশেপাশের অঞ্চলে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ডিসিডিডি সৌরভ সান্যালের নেতৃত্বে লালবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের দল তদন্ত শুরু করল। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী অম্লান চক্রবর্তীর অনুমত্যানুসারে টাপুরদিও নবদিগন্ত হোমে শিশু-কিশোরদের অন্তর্ধানের রহস্য উন্মোচনের জন্য সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাল। প্রকাশিত হতে থাকল হত্যা, অপহরণ সহ গভীর ষড়যন্ত্রের এক অন্ধকার কাহিনি।
একদিকে একটি কিশোরকে খুঁজে বের করার চ্যালেঞ্জ, অন্যদিকে একটি অপরাধ চক্র ভাঙার লড়াই কোথাও কি এসে মিশে যাবে? এই চক্রের মাস্টারমাইন্ড রাঘব সামন্তের আসল পরিচয় কী? কীভাবে এতটা ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠে এসব অপরাধীরা? কীভাবে রাজনীতির খেলা চলতে থাকে, কেমন করেই বা প্রশাসন, আইন এদের হাতের ক্রীড়নকে পরিণত হয়? স্বাস্থ্য পরিষেবার আড়ালে রোজ কতো অপরাধ সংঘটিত হয়, তারই এক জীবন্ত আলেখ্য 'মৃতেরা কোথাও নেই'।
টাপুরদি কি পারবে রহস্যের সমাধান করতে? নাকি এবার সত্যিই হেরে যাবে সে?
Reviews and Ratings
No Customer Reviews
Share your thoughts with other customers